হযরত
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নবী করীম (সাঃ)
বলেছেন, তোমাদের কেউ আহার করার সময় যদি তার লোকমা
পড়ে যায় তবে এতে সন্দেহের কিছু (ধূলো-বালি জাতীয়) দেখলে সে যেন তা পরিস্কার করে
নেয় এবং তারপর তা খেয়ে নেয়। আর শয়তানের
জন্য সে যেন তা ছেড়ে না দেয়।
{তিরমিযী-১৮০৯}
আনাস
ইবনে মালেক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) বলেছেন, “আল্লাহ তা‘আলা
জাহান্নামীদের সবচেয়ে হালকা আযাবের ব্যক্তিকে কিয়ামতের দিন বলবেন, তোমার
জন্য যদি দুনিয়াতে যা রয়েছে সব হয় তুমি কি তা মুক্তিপণ হিসেবে দিবে? সে
বলবে, হ্যাঁ, তিনি বলবেন, আমি
তোমার কাছে এরচেয়ে কম চেয়েছিলাম যখন তুমি আদমের ঔরসে ছিলে, আমার
সাথে কোন বস্তুকে অংশীদার করবে না, কিন্তু তুমি
আমার সাথে অংশীদার না করে ক্ষান্ত হওনি।”
{বুখারি
ও মুসলিম}
আবু
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমাদের
কাউকে তার আমল রক্ষা করবে না। জনৈক
ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলেন, আপনাকেও (রক্ষা করবে ) না, ইয়া
রাসূলুল্লাহ! তিনি বললেন, না, আমাকেও না, যদি
না আল্লাহ্ তা'আলা আমাকে তাঁর রহমত দ্বারা ঢেকে নেন। তবে
তোমরা সোজা পথে চলবার চেষ্টা কর।
{সহীহ
মুসলিম,হাদিস-২৮১৬;সহীহ
ইবনে হিব্বান,হাদিস- ৩৪৮; মুসনাদ
আহমাদ,হাদিস-১০৩৫৫; সহীহ
বুখারী,হাদিস-৬৩৬৪; মু'জাম
ইবনুল মুবারাক,হাদিস-১২৬৭;হুলিয়াতুল
আউলিয়া,হাদিস-১৩১৩৮}
হযরত আবু
হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, 'তোমরা
যখন ঘুম থেকে জাগ্রত হও তখন পাত্রে হাত দেওয়ার আগে তিনবার হাত ধুয়ে নিবে। কেননা
তোমাদের জানা নেই যে, ঘুমন্ত অবস্থায় হাত কোথায় কোথায় স্পর্শ
করেছে।'
- সহীহ
মুসলিমঃ ১/১৩৬
হযরত ওমর
(রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেছেন- যখনই কোন
পুরুষ পর নারীর সাথে নির্জনে দেখা করে তখনই শয়তান সেখানে তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে
উপস্থিত হয়।
{সুনানে
তিরমিযী, হাদিস নং-২১৬৫, সহীহ
ইবনে হিব্বান, হাদিস নং-৫৫৮৬}
হযরত
জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “শয়তান
তোমাদের সমস্ত কাজ কর্মে তোমাদের নিকট উপস্থিত হয়; এমনকি
তোমাদের খাবারের সময়েও উপস্থিত হয়। সুতরাং
যখন কারো খাবারের লোকমা (থালার বাইরে) পড়ে যায়, তখন
সে যেন তা তুলে তা থেকে ময়লা পরিস্কার করে খেয়ে নেয় এবং শয়তানের জন্য তা ফেলে
না রাখে। আর খাবারের শেষে সে যেন তার আঙ্গুলগুলো
চেটে নেয়। কারণ, তার
জানা নেই যে, তার খাবারের কোন অংশে বরকত রয়েছে।”
{সহীহ
মুসলিম ১০৩৮; তিরমিযী ১৮০১; মুসনাদে
আহমাদ ৮২৯৪, ৯১০৫}
হযরত আবু
হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্
(সাঃ) বলেছেন, নামাযের জন্য যখন আযান দেওয়া হয়, সেই
সময় শয়তান আযানের কথাগুলো সহ্য করতে না পেরে বায়ু নিঃসরণ করতে করতে পালাতে থাকে, যতক্ষণ
না আযানের শব্দসীমার বাইরে যায়। আযান শেষ
হলে ফের সে ফিরে আসে। (এবং মানুষের অন্তরে অস্অসা দিতে থাকে)। তারপর
যখন নামাযের জন্য তাকবীর বলা হয়, তখনও শয়তান পালিয়ে যায়। তাকবীর
শেষ হলে ফের সে ফিরে আসে এবং নামাযীর অন্তরে বিভিন্ন খেয়াল আনিয়ে দেয়। আর
বলে, অমুক কথা মনে কর, তমুক কথা
স্মরণ কর। যে-সব কথা নামাযের বাইরে মনে পড়ে না। শেষ
পর্যন্ত নামাযী ভুলে যায়, যে সে কত রাকআত নামায পড়েছে।
{বুখারী,কিতাবুল
আযান,বাব ৪, কিতাবুল আমাল ফিস সালাত,বাব ১৮; মুসলিম, কিতাবুস
সালাত,হাদিস নং-১৯, কিতাবুল
মাসাজিদ, হাদিস ৮৩-৮৪; আবু দাউদ, কিতাবুস
সালাত,বাব ৩১; নাসায়ী, কিতাবুল আযান, বাব ৩০; দারিমী,কিতাবুস
সালাত,বাব ১১,১৭৪; মুয়াত্তা মালিক,কিতাবুল
নিদা,হাদিস ৬; মুসনাদে আহমাদঃ ২/৩১৩, ৪৬০, ৫০৩,৫২২; বায়হাকীঃ ১/৩২১; তাজবীদ,২৮৩; তারগীব ওয়া
তারহীবঃ ১/১৭৭; মাজমাউয যাওয়ায়েদঃ ১/৩২৪; কানযুল
উম্মাল -৩০৮৮৩, ২০৯৪৭,২০৯৪৯}
হযরত আবু
যর (রাঃ ) থেকে বর্ণিত ,একবার শীতকালে গাছের পাতা ঝরে যাচ্ছিল।এমন
সময় নবী করীম (সাঃ ) ঘরের বাহিরে এলেন এবং একটি গাছের দু'টি
শাখা ধরে ঝাঁকি দিলেন।তখন ঝরঝর
করে গাছের শুকনো পাতা পড়তে লাগলো।নবী করীম (সাঃ
) বললেন-
"হে
আবু যর(রাঃ )! যখন কোন মুমিন একনিষ্ঠভাবে আন্তরিকতার সাথে নামায পড়ে তখন তার
পাপরাশি ঠিক এভাবে ঝরে পড়ে যেমন এ গাছের পাতাগুলো ঝরে পড়েছে।
(মুসনাদে
আহমাদ)
হযরত
জাবির (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) বলেছেন, ‘শয়তান তার সিংহাসনকে পানির উপর স্থাপন করে। তারপর
মানব সমাজে তার বাহিনীসমূহ প্রেরণ করে। তার
দৃষ্টিতে ফেৎনা সৃষ্টি করায় যে যত বড়, মর্যাদায়
সে তত বেশী নৈকট্যের অধিকারী। তাদের কেউ
একজন আসে আর বলে যে, আমি অমুকের পেছনে লেগেই থাকি। অবশেষে
তাকে এমন অবস্থায় রেখে এসেছি যে, সে এমন এমন
জঘন্য কথা বলে বেড়াচ্ছে। একথা শুনে
ইবলীস বলে, না, আল্লাহর শপথ!
তুমি কিছুই করনি।
আবার আরেক জন এসে বলে, আমি অমুক ও
তার স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটিয়েই তবে ছেড়েছি। রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) বলেন, একথা শুনে শয়তান তাকে কাছে টেনে নেয় এবং বলে, কত উত্তম
কাজই না তুমি করেছো ’
[মুসলিম
হা/২৮১৩; মিশকাত ‘ঈমান’ অধ্যায়, হা/৭১]